কম্পিউটার কি? কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি?

কম্পিউটার (Computer) হল একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্র যা সুনির্দিষ্ট নির্দেশ অনুসরণ করে গাণিতিক গণনা সংক্রান্ত কাজ খুব দ্রুত করতে পারে। কম্পিউটারের প্রধান কাজ হল তথ্য প্রক্রিয়া করা। তথ্য প্রক্রিয়াকরণের মধ্যে রয়েছে তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, সংগঠন, পরিবর্তন, ব্যবহার এবং যোগাযোগ।

কম্পিউটার কি

কম্পিউটার হল এমন একটি যন্ত্র যা তথ্য প্রক্রিয়া করতে পারে। এটি সুনির্দিষ্ট নির্দেশ অনুসরণ করে গাণিতিক গণনা সংক্রান্ত কাজ খুব দ্রুত করতে পারে। কম্পিউটার শব্দটি গ্রিক “কম্পিউট” শব্দ থেকে এসেছে। Compute শব্দের অর্থ হিসাব বা গণনা করা। আর কম্পিউটার শব্দের অর্থ গণনাকারী যন্ত্র।

কম্পিউটারের প্রধান কাজগুলি হল:

  • তথ্য প্রক্রিয়া করা
  • তথ্য সংরক্ষণ করা
  • তথ্য সরবরাহ করা

কম্পিউটার ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের কাজ করা যেতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • গণনা
  • লেখা
  • গ্রাফিক্স তৈরি করা
  • খেলাধুলা
  • যোগাযোগ

কম্পিউটার কত সালে আবিষ্কার হয়

কম্পিউটারের ইতিহাস বেশ দীর্ঘ। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন ধরনের গণনা যন্ত্র ব্যবহার করা হতো। অ্যাবাকাস (Abacus) নামক একটি প্রাচীন গণনা যন্ত্রকেই কম্পিউটারের ইতিহাসে প্রথম যন্ত্র হিসেবে ধরা হয়। অ্যাবাকাস খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দের দিকে মেসোপটেমিয়ায় আবিষ্কৃত হয়েছিল।

১৭শ শতাব্দীতে গণিতবিদ ভায়াজেক পিয়াটস্কি (Blaise Pascal) এবং গোটফ্রিড উইলহেম লিবনিজ (Gottfried Wilhelm Leibniz) যথাক্রমে পাসকালাইন (Pascaline) এবং লাইবনিজ গণনাযন্ত্র (Leibniz Calculator) নামে দুটি গুরুত্বপূর্ণ গণনা যন্ত্র আবিষ্কার করেন।

১৮শ শতাব্দীতে চার্লস ব্যাবেজ (Charles Babbage) বিশ্লেষণাত্মক ইঞ্জিন (Analytical Engine) নামে একটি তত্ত্বাগত কম্পিউটারের নকশা প্রণয়ন করেন। বিশ্লেষণাত্মক ইঞ্জিন ছিল প্রথম প্রোগ্রামযোগ্য কম্পিউটার। কিন্তু ব্যাবেজের মৃত্যুর পর তার নকশা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

১৯শ শতাব্দীতে বিভিন্ন ধরনের মেকানিকাল কম্পিউটার আবিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • ১৮২২ সালে চার্লস ব্যাবেজের ফার্স্ট ডিফারেন্স ইঞ্জিন (First Difference Engine)
  • ১৮২৩ সালে চার্লস ব্যাবেজের সেকেন্ড ডিফারেন্স ইঞ্জিন (Second Difference Engine)
  • ১৮৭৬ সালে ডুপ্লেক্স (Duplexer)
  • ১৮৮০ সালে হাওয়ার্ড এডওয়ার্ড ডেভিস (Howard Edward Davis) এর গণনাযন্ত্র
  • ১৮৯০ সালে লুইস এম. হিম্যান (Lewis M. Hine) এর গণনাযন্ত্র

২০শ শতাব্দীতে ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের বিকাশ শুরু হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • ১৯৪৪ সালে জার্মানিতে তৈরি কোনরাড জুসের জামানিজ (Z3)
  • ১৯৪৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি হাওয়ার্ড আইকেনের এনিঅ্যাক (ENIAC)
  • ১৯৫১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি আইবিএম ১ (IBM 1)
  • ১৯৫২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি এডওয়ার্ড আর্চার মিলারের ইউনিভ্যাক আই (UNIVAC I)

১৯৬০-এর দশকে মাইক্রোপ্রসেসর আবিষ্কারের ফলে কম্পিউটারের আকার ছোট এবং দাম কমে যায়। এর ফলে কম্পিউটার জনগণের কাছে আরও সহজলভ্য হয়ে ওঠে।

১৯৮০-এর দশকে ব্যক্তিগত কম্পিউটারের (Personal Computer) বিকাশ ঘটে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • ১৯৭৫ সালে অ্যাপল ২ (Apple II)
  • ১৯৭৭ সালে আইবিএম পিসি (IBM PC)
  • ১৯৮৪ সালে ম্যাকিনটোশ (Macintosh)

১৯৯০-এর দশকে ইন্টারনেটের বিকাশের ফলে কম্পিউটারের ব্যবহার আরও ব্যাপক হয়ে ওঠে।

আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে

আধুনিক কম্পিউটারের জনক হিসেবে অ্যালান টুরিং (Alan Turing) কে বিবেচনা করা হয়। তিনি টিউরিং মেশিন (Turing Machine) আবিষ্কার করেন, যা অ্যালগরিদম এবং গণনার ধারণার জন্য দায়ী। টিউরিং মেশিন হল একটি তাত্ত্বিক কম্পিউটার যা কোনও নির্দিষ্ট অ্যালগরিদম অনুসরণ করে প্রক্রিয়াগুলি সম্পাদন করতে পারে।

টিউরিং মেশিনের ধারণা আধুনিক কম্পিউটারের বিকাশে একটি মৌলিক ভূমিকা পালন করেছে। টিউরিং মেশিনের ধারণার উপর ভিত্তি করেই আধুনিক কম্পিউটারের প্রোগ্রামিং এবং নিয়ন্ত্রণের নীতিগুলি তৈরি করা হয়েছে।

এছাড়াও, টিউরিং মেশিন কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বগত হাতিয়ার হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। টিউরিং মেশিনের সাহায্যে বিভিন্ন অ্যালগরিদমের কার্যকরতা এবং জটিলতা নির্ধারণ করা যায়।

অ্যালান টুরিং ১৯১২ সালে ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন বিখ্যাত গণিতবিদ, যুক্তিবিদ, কম্পিউটার বিজ্ঞানী এবং ক্রিপ্টোগ্রাফার ছিলেন। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানদের ক্রিপ্টোগ্রাফি ভেঙে ফেলার জন্য তার কাজের জন্য বিখ্যাত।

১৯৫২ সালে, টুরিংকে সমকামিতার জন্য গ্রেফতার করা হয় এবং তাকে হরমোন থেরাপি গ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়। ১৯৫৪ সালে, তিনি আত্মহত্যা করেন।

অ্যালান টুরিংকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয় কারণ তিনি টিউরিং মেশিন আবিষ্কারের মাধ্যমে কম্পিউটার বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেন।

কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি

কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি

কম্পিউটারকে বিভিন্ন উপায়ে শ্রেণীবিভাগ করা যায়। কম্পিউটারের গঠন ও প্রচলন নীতির ভিত্তিতে কম্পিউটারকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়:

  • এনালগ কম্পিউটার
  • ডিজিটাল কম্পিউটার
  • হাইব্রিড কম্পিউটার

এনালগ কম্পিউটার

এনালগ কম্পিউটার হলো এমন কম্পিউটার যা পরিমাপযোগ্য পরিমাণের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত সংখ্যার সাথে কাজ করে। এনালগ কম্পিউটারের তথ্য ধারণের একক হলো অনান্য (analog)। এনালগ কম্পিউটারের উদাহরণ হলো:

  • গাড়ির স্পিড মিটার
  • থার্মোমিটার
  • অ্যাম্পিয়ার মিটার

ডিজিটাল কম্পিউটার

ডিজিটাল কম্পিউটার হলো এমন কম্পিউটার যা শুধুমাত্র দুটি মান, ০ এবং ১, ব্যবহার করে কাজ করে। ডিজিটাল কম্পিউটারের তথ্য ধারণের একক হলো বিট (bit)। ডিজিটাল কম্পিউটারের উদাহরণ হলো:

  • ব্যক্তিগত কম্পিউটার
  • সার্ভার
  • ওয়ার্কস্টেশন

হাইব্রিড কম্পিউটার

হাইব্রিড কম্পিউটার হলো এমন কম্পিউটার যা অ্যানালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্যগুলিকে একত্রিত করে। হাইব্রিড কম্পিউটারের উদাহরণ হলো:

  • কম্পিউটারাইজড এক্স-রে মেশিন
  • কম্পিউটারাইজড টমোগ্রাফি (CT) স্ক্যানার
  • ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (MRI) স্ক্যানার

কম্পিউটারের আকার ও ব্যবহারের ভিত্তিতে কম্পিউটারকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়:

  • মাইক্রোকম্পিউটার
  • মিনি কম্পিউটার
  • মেইনফ্রেম কম্পিউটার
  • সুপার কম্পিউটার

মাইক্রোকম্পিউটার

মাইক্রোকম্পিউটার হলো সবচেয়ে ছোট ও সাধারণ কম্পিউটার। মাইক্রোকম্পিউটার সাধারণত একক ব্যবহারকারীর জন্য ডিজাইন করা হয়। মাইক্রোকম্পিউটারের উদাহরণ হলো:

  • ব্যক্তিগত কম্পিউটার
  • ল্যাপটপ
  • ডেস্কটপ

মিনি কম্পিউটার

মিনি কম্পিউটার হলো মাইক্রোকম্পিউটারের চেয়ে বড় কম্পিউটার। মিনি কম্পিউটার একাধিক ব্যবহারকারীর জন্য ডিজাইন করা হয়। মিনি কম্পিউটারের উদাহরণ হলো:

  • নেটওয়ার্ক কম্পিউটার
  • সার্ভার

মেইনফ্রেম কম্পিউটার

মেইনফ্রেম কম্পিউটার হলো বড় ও শক্তিশালী কম্পিউটার। মেইনফ্রেম কম্পিউটার একাধিক ব্যবহারকারীর জন্য ডিজাইন করা হয়। মেইনফ্রেম কম্পিউটারের উদাহরণ হলো:

  • বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার

সুপার কম্পিউটার

সুপার কম্পিউটার হলো সবচেয়ে দ্রুত ও শক্তিশালী কম্পিউটার। সুপার কম্পিউটার বৈজ্ঞানিক ও প্রকৌশল গবেষণায় ব্যবহৃত হয়। সুপার কম্পিউটারের উদাহরণ হলো:

  • নিউক্লিয়ার গবেষণার জন্য ব্যবহৃত কম্পিউটার
  • আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত কম্পিউটার

এছাড়াও, কম্পিউটারকে ব্যবহারের উদ্দেশ্য অনুসারেও বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন:

  • ব্যক্তিগত কম্পিউটার
  • শিক্ষামূলক কম্পিউটার
  • শিল্প কম্পিউটার
  • **স্বাস্থ্যসেবা কম্পিউ

কম্পিউটারের মূল অংশ কয়টি

কম্পিউটারের মূল অংশ চারটি:

  • ইনপুট
  • প্রসেসিং
  • মেমরি
  • আউটপুট

ইনপুট

ইনপুট হলো কম্পিউটারের সাথে তথ্য প্রবেশ করানোর প্রক্রিয়া। ইনপুট ডিভাইসগুলি ব্যবহারকারীর কাছ থেকে তথ্য গ্রহণ করে এবং কম্পিউটারের প্রসেসরকে পাঠায়। ইনপুট ডিভাইসের উদাহরণ হলো:

  • কীবোর্ড
  • মাউস
  • স্ক্যানার
  • ক্যামেরা

প্রসেসিং

প্রসেসিং হলো কম্পিউটারের তথ্য প্রক্রিয়াকরণের প্রক্রিয়া। প্রসেসর হলো কম্পিউটারের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ইউনিট (CPU)। প্রসেসর ইনপুট ডিভাইস থেকে প্রাপ্ত তথ্য গ্রহণ করে এবং প্রয়োজনীয় হিসাব-নিকাশ করে। প্রসেসর তথ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য বিভিন্ন ধরনের যুক্তিগত এবং গাণিতিক অপারেশন সম্পাদন করতে পারে।

মেমরি

মেমরি হলো কম্পিউটারের তথ্য সংরক্ষণের স্থান। মেমরিতে প্রোগ্রাম, ডেটা এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। মেমরি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন:

  • র‍্যাম (RAM): র‍্যাম হলো কম্পিউটারের ক্ষণস্থায়ী মেমরি। র‍্যামে থাকা তথ্য কম্পিউটার বন্ধ করলে মুছে যায়।
  • রম (ROM): রম হলো কম্পিউটারের স্থায়ী মেমরি। রম-এ থাকা তথ্য কম্পিউটার বন্ধ করলেও মুছে যায় না।

আউটপুট

আউটপুট হলো কম্পিউটারের প্রক্রিয়াজাত তথ্য প্রদর্শনের প্রক্রিয়া। আউটপুট ডিভাইসগুলি কম্পিউটারের প্রসেসর থেকে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহারকারীর কাছে প্রদর্শন করে। আউটপুট ডিভাইসের উদাহরণ হলো:

  • মনিটর
  • প্রিন্টার
  • স্পিকার

এই চারটি মূল অংশ ছাড়াও, কম্পিউটারের আরও অনেক উপাদান রয়েছে। যেমন:

  • মাদারবোর্ড
  • ক্যানেক্টর
  • সফটওয়্যার

এই উপাদানগুলি কম্পিউটারের সামগ্রিক কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।

কম্পিউটার এর বিভিন্ন অংশ

কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশকে সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়: হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার

হার্ডওয়্যার হল কম্পিউটারের দৃশ্যমান এবং স্পর্শযোগ্য অংশ। এটি কম্পিউটারের শারীরিক কাঠামো এবং উপাদান নিয়ে গঠিত। হার্ডওয়্যারের মধ্যে রয়েছে:

  • প্রসেসর: এটি কম্পিউটারের মস্তিষ্ক। এটি তথ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং সমস্ত গণনা সম্পাদন করে।
  • মাদারবোর্ড: এটি কম্পিউটারের সমস্ত হার্ডওয়্যার অংশকে সংযুক্ত করে।
  • র‍্যাম: এটি কম্পিউটারের ক্ষণস্থায়ী মেমরি। এটি প্রক্রিয়া করা তথ্য সাময়িকভাবে সংরক্ষণ করে
  • স্টোরেজ ডিভাইস: এটি কম্পিউটারের দীর্ঘমেয়াদী মেমরি। এটি তথ্য, যেমন ফাইল, অ্যাপ্লিকেশন এবং অপারেটিং সিস্টেম দীর্ঘ সময়ের জন্য সংরক্ষণ করে। স্টোরেজ ডিভাইসের মধ্যে রয়েছে হার্ড ড্রাইভ, সোলিড স্টেট ড্রাইভ, অপটিক্যাল ড্রাইভ এবং মেমরি কার্ড।
  • ইনপুট ডিভাইস: এগুলি ব্যবহারকারীর কাছ থেকে তথ্য প্রবেশ করতে ব্যবহৃত হয়। ইনপুট ডিভাইসের মধ্যে রয়েছে কীবোর্ড, মাউস, ট্র্যাকপ্যাড, ক্যামেরা এবং মাইক্রোফোন।
  • আউটপুট ডিভাইস: এগুলি কম্পিউটারের প্রক্রিয়াকৃত তথ্য প্রদর্শন বা শোনাতে ব্যবহৃত হয়। আউটপুট ডিভাইসের মধ্যে রয়েছে মনিটর, প্রিন্টারে, স্পিকার এবং হেডফোন।

সফটওয়্যার হল কম্পিউটারের অদৃশ্য অংশ। এটি কম্পিউটারের নির্দেশাবলী এবং প্রোগ্রামগুলি নিয়ে গঠিত। সফটওয়্যারের মধ্যে রয়েছে:

  • অপারেটিং সিস্টেম: এটি কম্পিউটারের মৌলিক সফটওয়্যার। এটি কম্পিউটারের অন্যান্য সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যারের মধ্যে যোগাযোগ এবং সমন্বয় করার জন্য দায়ী।
  • অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার: এটি ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট কাজগুলি সম্পাদন করতে সহায়তা করে। অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারের মধ্যে রয়েছে ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার, গ্রাফিক্স সফটওয়্যার, ভিডিও গেম এবং ওয়েব ব্রাউজার।

কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার একসাথে কাজ করে বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করে।

কম্পিউটার কি

কম্পিউটার হার্ডওয়ার VS কম্পিউটার সফটওয়্যার

একটি কম্পিউটার সিস্টেম দুটি প্রধান উপাদান নিয়ে গঠিত: হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যার।

হার্ডওয়্যার হল একটি কম্পিউটারের শারীরিক উপাদান। এটি হল সেই জিনিস যা আপনি দেখতে এবং স্পর্শ করতে পারেন, যেমন মাদারবোর্ড, প্রসেসর, মেমরি, হার্ড ড্রাইভ, মনিটর, কীবোর্ড এবং মাউস। হার্ডওয়্যার কম্পিউটারের অ্যাপ্লিকেশনগুলিকে চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় ডেটা এবং নির্দেশাবলী প্রক্রিয়া করতে এবং সঞ্চয় করতে ব্যবহৃত হয়।

সফ্টওয়্যার হল একটি কম্পিউটারের নির্দেশাবলীর সেট। এটি হল সেই জিনিস যা আপনি দেখতে বা স্পর্শ করতে পারবেন না, যেমন অপারেটিং সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম এবং ডিভাইস ড্রাইভার। সফ্টওয়্যার কম্পিউটারকে কী করতে হবে তা বলে। এটি হার্ডওয়্যারকে কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তা নির্দিষ্ট করে এবং ব্যবহারকারীদের কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করতে দেয়।

হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যারের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ:

বৈশিষ্ট্যহার্ডওয়্যারসফ্টওয়্যার
অবস্থাশারীরিকঅ-শারীরিক
দৃশ্যমানতাদৃশ্যমানঅদৃশ্য
স্পর্শযোগ্যতাস্পর্শযোগ্যঅস্পর্শনীয়
উদ্দেশ্যডেটা প্রক্রিয়াকরণ এবং সঞ্চয়কম্পিউটারকে নির্দেশ দেওয়া
উদাহরণমাদারবোর্ড, প্রসেসর, মেমরি, হার্ড ড্রাইভ, মনিটর, কীবোর্ড, মাউসঅপারেটিং সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম, ডিভাইস ড্রাইভার

হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যার একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। হার্ডওয়্যার সফ্টওয়্যার চালানোর জন্য প্রয়োজনীয়, এবং সফ্টওয়্যার হার্ডওয়্যারকে কী করতে হবে তা বলে।

কম্পিউটার এর ব্যবহার

কম্পিউটার এর ব্যবহার

কম্পিউটারগুলি আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এখানে কম্পিউটারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার রয়েছে:

  • গণনা: কম্পিউটারগুলি জটিল গাণিতিক সমস্যাগুলি সমাধান করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, তারা আবহাওয়ার পূর্বাভাস, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ফার্মেসির গবেষণায় ব্যবহৃত হয়।
  • বিনোদন: কম্পিউটারগুলি গেম, মুভি, সঙ্গীত এবং অন্যান্য বিনোদনমূলক সামগ্রী প্রদানের জন্য ব্যবহৃত হয়। তারা আমাদের অবসর সময় উপভোগ করতে এবং আমাদের জীবনকে আরও আনন্দদায়ক করে তুলতে সাহায্য করে।
  • যোগাযোগ: কম্পিউটারগুলি ইমেল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়। তারা আমাদের অন্যদের সাথে সংযুক্ত থাকতে এবং বিশ্বের সাথে সংযোগ করতে সাহায্য করে।
  • শিক্ষা: কম্পিউটারগুলি শিক্ষার্থীদের শিখতে সাহায্য করার জন্য শিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, তারা অনলাইন কোর্স, মাল্টিমিডিয়া উপকরণ এবং ভিডিও গেম সরবরাহ করে।
  • ব্যবসা: কম্পিউটারগুলি ব্যবসা পরিচালনা এবং কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, তারা বিপণন, গ্রাহক পরিষেবা এবং হিসাবরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • বিজ্ঞান: কম্পিউটারগুলি বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা এবং বিকাশের জন্য ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, তারা মহাকাশ গবেষণা, চিকিৎসা গবেষণা এবং পরিবেশগত গবেষণায় ব্যবহৃত হয়।

কম্পিউটারগুলি আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলেছে। তারা আমাদের জীবনকে আরও সহজ, আরও কার্যকর এবং আরও আনন্দদায়ক করে তোলে।

পাঠকের মন্তব্য:

Check Also

হার্ডওয়্যার কাকে বলে

হার্ডওয়্যার কাকে বলে? হার্ডওয়্যার এর কয়টি অংশ ও কি কি?

হার্ডওয়্যার কাকে বলে? যদি প্রশ্ন করা হয় তাহলে এক কথায় বলতে হয়, কম্পিউটারের শারীরিক অংশসমূহকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *