ক’রোনাভা’ইরাসে বা কোভিড-১৯ ম’হামা’রি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে গোটা বিশ্ব। ভাই’রাসটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ লাখ মানুষ আ’ক্রান্ত হয়েছেন। মা’রা গেছেন মা’রা গেছেন ৪ লাখ ৫১ হাজারের বেশি মানুষ।



কিন্তু গবেষকদের ত’থ্য বলছে, ক’রোনাভা’ইরাসেের চেয়ে ভ’য়ংকর একাধিক মারণ ভাই’রাস রয়েছে পৃথিবীতে। যা খুব সহযেই ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক এক প্রধান এ আ’শঙ্কা করেছিলেন বেশ কয়েক মাস আগে। তার সতর্ক বার্তা নিয়ে দ্য গ্লোবাল প্রিপেয়ার্ডনেস মনিটরিং বোর্ড (জিপিএমবি) এর ‘এ্যা ওয়ার্ল্ড এট রিক্স’ শিরোনামে প্রকাশিত এক গ’বেষ’ণা রিপোর্টে এ সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছিল।



গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জিপিএমবি তাদের এ গ’বেষ’ণা রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। তখন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়েছিল, জিপিএমপির গবেষকরা বলছেন, আলোচিত ইবোলা, জিকা বা ডেঙ্গুর মতো করেই এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়িয়ে পড়ার আ’শঙ্কা রয়েছে।



বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক প্রধান ও নরওয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী আল হাদ আজ সি এর নেতৃত্বে এ গ’বেষ’ণা পরিচালিত হয়। তিনি বর্তমানে জিপিএমবি এর সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।



এর আগে ২০১৬ সালে রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলে ১২ বছর বয়সী এক শি’শুর মৃ’ত্যু হয় অজানা রো’গে। ওই এলাকার আরও প্রায় ১১৫ জন অল্প সময়ের ব্যবধানে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে জানা যায়, তারা সবাই একটি মা’রাত্মক ব্যাকটেরিয়ায় আ’ক্রান্ত। যার নাম ব্যাসিলাস অ্যানথ্রাসিস বা অ্যান্থ্রাক্স।



বিশেষজ্ঞরা গ’বেষ’ণা করে বের করেন, ১৯৪১ সালে একটি বলগা হরিণ মা’রা গিয়েছিল। ৭৫ বছর আগে মা’রা যাওয়া ওই হরিণটি থেকে রো’গটি ছড়িয়েছে। আবহাওয়া অধিক উষ্ণ হওয়ায় সেখানকার বরফায়িত মাটি বা পারমাফ্রস্ট গলে বেরিয়ে এসেছিল সেই অ্যান্থ্রাক্স।



২০১৫ সালে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা তিব্বতে গলিত তুষারের স্রোত থেকে ২৮টি নতুন ধরনের ভাই’রাস খুঁজে পান। বায়োরিভ নামে একটি ওয়েবসাইটে ওই গ’বেষ’ণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।



সেখানে বলা হয়, গবেষকরা ১৬৪ ফুট গর্ত খুঁড়ে ১৫শ’ বছরের পুরনো গ্লাসিয়ার থেকে দুটি নমুনা সংগ্রহ করেন। পরে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে তারা মোট ৩৩ ধরনের ভাই’রাসের সন্ধান পান। যার মধ্যে ২৮টি ভাই’রাসই আগে কখনো কেউ খুঁজে পাননি।



পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিনিয়ত গলছে তিব্বত থেকে শুরু করে মেরু অঞ্চলসহ উত্তর গোলার্ধের তুন্দ্রা, সাইবেরিয়া আলাস্কা এবং গ্রিনল্যান্ড অঞ্চলের বরফ। ভ’য়ের কথা হলো, গ’বেষ’ণায় বেরিয়ে আসছে, এসব বরফের স্তরে স্তরে এখনো টিকে আছে আদিম সব ভাই’রাস, ব্যাকটেরিয়াসহ বিভিন্ন মা’রাত্মক রো’গ জী’বাণু। যার বেশিরভাগই আধুনিক যুগের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফে’লে দিতে পারে। মানুষের শ’রীরের রো’গ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও ওইসব ভাই’রাস ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে পরিচিত নয়।



ভাই’রাস ব্যাকটেরিয়া নিয়ে বিজ্ঞানীদের পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং গ’বেষ’ণা চলছে। এখন নিশ্চিতভাবেই তা আরো বেড়েছে। এরই মধ্যে তারা অনেক ভ’য়ঙ্কর ভাই’রাসের অস্তিত্বের খোঁজ পেয়েছেন। সেগুলো সুবিধাজনক পরিবেশ পেলে অর্থাৎ উষ্ণতা আরেকটু বাড়লে প্রকৃতিতে ছড়াতে শুরু করবে। এসব ভাই’রাস ম’হামা’রী ছড়াতে স’ক্ষম।



ফ্রান্সের এআইএক্স মার্সেই ইউনিভার্সিটির মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. জন মাইকেল ক্ল্যাভেরিয়ে গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, আমরা প্রথমবারের চেষ্টাতেই ত্রিশ হাজার বছরের পুরনো সুপারভাই’রাসকে জাগিয়ে তুলতে পেরেছি। সেটা তাৎক্ষণিকভাবে অ্যামিবাকে সংক্রমিত করতে পেরেছে। কিন্তু পারমাফ্রস্টের মধ্যে আরো কি কি ধরনের জী’বাণু লুকিয়ে আছে তা আসলে আমরা জানি না। এটা অনুমান করাও সম্ভব না।



২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সি অব ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) ম’হামা’রি নিয়ে একটি গ’বেষ’ণা প্রো’গ্রাম শুরু করে ‘প্রেডিক্ট’ নামে। এটির কাজ ছিল জুনটিক (যেসব ভাই’রাস প্রা’ণী থেকে মানুষে ছড়াতে পারে) ভাই’রাস শনাক্ত করা যেগুলো মানব সমাজে ম’হামা’রি ঘটাতে স’ক্ষম এবং বিশ্বকে এই ধরনের ভাই’রাস মো’কাবিলায় স’ক্ষম করে তোলা।
এর গবেষকরা দেখেছেন, ২১ শতকের শুরুর দিকে যতগুলো নতুন ভাই’রাস কিংবা নতুন করে প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়া ভাই’রাস তার ৭৫ শতাংশই অন্য প্রা’ণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে।



‘প্রেডিক্ট’ ১ হাজার ১০০টি ভিন্ন ধরনের ভাই’রাস আবি’ষ্কার করে। ৬০টি রো’গ শনাক্তকরণ ল্যাবরেটরি তৈরি করে এবং ৩০টি দেশের ৬ হাজার ২০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের ত’থ্যমতে, জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং বারাক ওবামা প্রশাসন এ গ’বেষ’ণা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়েছিল।