




চলতি জুনেই লিগ ওয়ানের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ফুরাবে আর্জেন্টাইন উইঙ্গার অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার। পিএসজি কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, তার সঙ্গে নতুন কোনো চুক্তি করবে না ক্লাব। নতুন ক্লাবের সন্ধানে থাকা ডি মারিয়ার সম্ভাব্য ক্লাব হিসেবে শোনা যাচ্ছে ইতালিয়ান জায়ান্ট য়্যুভেন্তাসের নাম। এ দলবদলের চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার আগেই য়্যুভেন্তাসের কিংবদন্তি গোলরক্ষক জিয়ানলুইগি বুফন বলছেন, ইতালিতে নতুন ম্যারাডোনা হবেন ডি মারিয়া।
পিএসজির সঙ্গে নতুন চুক্তিতে আগ্রহী ছিলেন ডি মারিয়া কিন্তু ক্লাবের আগ্রহ না থাকায় নতুন ক্লাবের সন্ধানে নামতেই হচ্ছে আর্জেন্টাইন সুপারস্টারকে। ৩৪ বছর বয়সী তারকাকে দলে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বেশ কয়েকটা ক্লাব। সম্ভাব্য ক্লাব হিসেবে বার্সেলোনার নামেও গুঞ্জন থাকলেও এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা য়্যুভেন্তাসের। সিরি ‘আ’র জায়ান্ট দলটি তাকে দলে নিতে দিয়েছে লোভনীয় প্রস্তাব।





তবে তুরিনের বুড়িতে যোগ দেওয়ার আগেই ক্লাবটির ইতিহাসের অন্যতম সেরা এক তারকার থেকে দারুণ এক প্রশংসাপত্র পেয়েছেন আর্জেন্টিনার কোপা আমেরিকা জয়ের নায়ক। ফাইনালের গোলদাতাকে নিয়ে ইতালির বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক জিয়ানলুইগি বুফন বলেছেন, ডি মারিয়া যদি ইতালিতে আসেন। তবে তিনিই হবেন নতুন ম্যারাডোনা। দিয়েছেন নিজের মতের স্বপক্ষে যুক্তিও।
ইতালির ক্লাব নাপোলিতে যখন ম্যারাডোনা যোগ দেন তখন খুব একটা ভালো অবস্থা ছিল না ক্লাবটির। নেপলসের ক্লাবটিতে যোগ দিয়ে অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স দেখিয়ে দুবার জেতান স্কুদেত্তো (সিরি ‘আ’ শিরোপা)। তার জনপ্রিয়তা বদলে দেয় ক্লাবের আর্থিক অবস্থাও। ডি মারিয়াও মাঠের খেলায় ম্যারাডোনার মতোন প্রভাব রাখতে পারবেন বলে মনে করেন বুফন।
ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যম ল্য গেজেট ডেল স্পোর্তের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বুফন বলেন, ‘ইতালিয়ান লিগে ডি মারিয়া হবে ম্যারাডোনার মতো। আমি কি ব্যাখ্যা করবো? এখন টেকনিক্যাল দিক থেকে সিরি এ অনেক এগিয়েছে এবং ডি মারিয়ার খেলার মানও অনেক ভালো।’





ডি মারিয়ার খেলার ধরন ও চ্যাম্পিয়ন মনোভাবের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘সে নিখুঁতভাবে প্রতিপক্ষকে হারিয়ে দিতে পারে, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ফল বদলে দিতে পারে, চমৎকার সব অ্যাসিস্ট করে এবং সাড়া মাঠ দৌড়ে খেলে। একাই সে অনেক ভূমিকা পালন করতে পারে। এক কথায় বলতে গেলে ডি মারিয়া একজন উঁচুমাপের খেলোয়াড়।’
ক্যারিয়ারের অধিকাংশ সময়টাই য়্যুভেন্তাসে কাটানো বুফন ২০১৮-১৯ মৌসুমে এক মৌসুমের জন্য খেলেছিলেন পিএসজিতে। সে সময়ে খুব কাছে থেকে দেখেছেন ডি মারিয়ার খেলা। তাই বয়স ৩৪ হয়ে গেলেও তা এই তারকার পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলবে না বলে জোর বিশ্বাস বুফনের। দৃষ্টান্ত হিসেবে নিজের কথাই বলছেন ৪৪ বছর বয়সী কিংবদন্তি। য়্যুভেন্তাস ছেড়ে ২০২১ সালে তিনি যোগ দেন তার শৈশবের ক্লাব পারমায়। সিরি ‘বি’র ক্লাবটির হয়ে এরমধ্যেই ২৬টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তিনি।





বুফন বলেন, ‘ডি মারিয়ার বয়স ৩৪ হওয়ায় দুর্ভাবনা? আমার বয়স ৪৪ এবং আমি এখনও খেলছি। এখানে বয়স কোনো বিষয় নয়। নিজের কাজের প্রতি কতটা নিবেদন থাকে, কতটা পরিশ্রম থাকে সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। ডি মারিয়া যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে জুভেন্টাসে যাওয়ার, সে প্রস্তুত হয়েই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
এই সাক্ষাৎকারে ডি মারিয়ার সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়েও বলেছেন ২০০৬ বিশ্বকাপে গোল্ডেন গ্লোভসজয়ী বুফন, ‘আমরা একজন আপাদমস্তক পেশাদার ফুটবলারের ব্যাপারে কথা বলছি। একইসঙ্গে সে খুব ভালো একজন মানুষ যে কখনও হাল ছাড়তে রাজি নয়, প্রয়োজনে একাই লড়তে প্রস্তুত থাকে। শুধু ম্যাচে নয়, ট্রেনিংয়েও শক্ত একাগ্রতা থাকে ডি মারিয়ার।’
পাঠকের মন্তব্য: