




সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলীর ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, রুবেল ও সাগরসহ ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৩১ জানুয়ারি) কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল ৩০০ পৃষ্ঠার রায়ের সারসংক্ষেপ পড়া শেষে এই রায় ঘোষণা করেন। রায় পড়ার সময় বিচারক বলেন, সিনহার পরিচয় জানার পর স্যালুট দিয়েছিলেন চেকপোস্টে থাকা সদস্যরা। এর একটু পর তাঁরাই কেন আবার গুলি করতে সহযোগিতা করলেন? এই হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত।





যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় শুনে কাঠগড়ায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন আসামি মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিন। এরপরে তারা অপর যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নন্দ দুলাল রক্ষিতকে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। এ সময় আইয়াজ বলতে থাকেন, আমাকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় নন্দ দুলাল। সে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।
এদিকে ফাঁসির রায় শুনে চোখে পানি নিয়ে মলিন চেহারায় চুপচাপ এজলাসের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। তার চেহারা দেখে মনে হয়েছে, তিনি কিছু বলতে চাইলেও যেনও মুখ থেকে কোনও কথা বের হচ্ছে না। এক কথায়, ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের রায় শুনে তিনি যেন একটি জীবন্ত লাশ বনে গেছেন। প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলীর চেহারাতেও।





সিনহা হত্যা মামলায় রায়ের পর মামলার বাদী ও নিহতের বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বলেছেন, আমাদের প্রত্যাশা অনেকখানি পূরণ হয়েছে, সন্তুষ্টির জায়গাটা সেদিন বলবো যেদিন এটা কার্যকর হবে। মামলায় তদন্ত সংস্থা এবং প্রসিকিউশসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে যে আইনের শাসন আছে তাতে মানুষ আশাবাদী হবে। প্রধান দুই আসামির এমন শাস্তি না হলে আমরা অবাক হতাম। আদালত চুলচেরা বিশ্লেষণ করে রায় দিয়েছেন। আমাদের প্রত্যাশা অনেকখানি পূরণ হয়েছে, সন্তুষ্টির জায়গাটা সেদিন বলব যেদিন এটা কার্যকর হবে।
পাঠকের মন্তব্য: