




পাবনার সাঁথিয়ায় দেবরকে বিয়ের দাবিতে তার ঘরে আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন বড় ভাইয়ের স্ত্রী সম্পা আক্তার (৩৫)। সেই ঘটনার এখনও কোনো সমাধান হয়নি। উল্টো ভাবিকে রেখে অন্যত্রে বিয়ে করতে গিয়ে জরিমানা গুনেছেন সেই দেবর ইব্রাহিম। শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) সেই দেবর অন্যত্রে বিয়ে করতে গেলে ভাবি সেখানে উপস্থিত হয়ে সব ঘটনা খুলে বলেন। এতে পাত্রীপক্ষ বিয়ে তো দেয়ইনি উপরন্তু ইব্রাহিমকে বিয়ে বাড়ির খাবার বাবদ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। বরযাত্রীদের ফিরতে হয়েছে না খেয়ে।
এ ঘটনায় শনিবার (২৯ জানুয়ারি) ওই নারীকে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে দেবর ইব্রাহিমকে বিয়ের দাবিতে তার ঘরে অনশনে ছিলেন ভাবি। সম্পার দাবি, বিয়ের পর থেকেই দেবরের সাথে ১৫ বছর ধরে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে আছেন তারা। এর মধ্যে মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) ইব্রাহিমের পরিবার গোপনে অন্যত্র তার ইব্রাহিমের বিয়ে ঠিক করে। শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) ইব্রাহিমের বিয়ের দিন ধার্য হয়। এ খবর পেয়ে বিয়ের দাবিতে দেবরের ঘরে অনশনে বসেন ভাবি সম্পা আক্তার। এরপর দেবর ইব্রাহিম বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।





তারপর ইব্রাহিম কয়েকজন বরযাত্রী নিয়ে গোপনে বিয়ে করতে যান। এরই মধ্যে তার ভাবি সেখানে উপস্থিত হয়ে তাদের সম্পর্কের কথা সবাইকে নিজ মুখে জানান। পাত্রীপক্ষ ইব্রাহিমের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে অস্বীকার করে। তারা তাৎক্ষণিক সালিশি বৈঠকে বসে বিয়ে বাড়িতে সব আয়োজনের খরচ বাবদ ৩০ হাজার টাকা ইব্রাহিমের কাছ থেকে আদায় করে। ইব্রাহিমের সঙ্গে যাওয়া বরযাত্রীদেরও না খেয়ে ফিরে আসতে হয়।
অনশনরত নারী জানান, তিনি তিনদিন ধরে দেবরের ঘরে বিয়ের দাবিতে না খেয়ে বসেছিলেন। কিন্তু শনিবার (২৯ জানুয়ারি) তার শাশুড়ি তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। এখন তিনি পাশের এক বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানান। তিনি জানান, এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে বিচার দিয়েছেন। সমাধান না হলে তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন।





তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, তার সঙ্গে যদি ইব্রাহিমের সম্পর্ক না থাকে তাহলে কেন সে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে? তিনি নায্যবিচার দাবি করেছেন। অভিযুক্ত দেবর ইব্রাহিম বলেন, ভাবির সঙ্গে তার কোনো রকম প্রেমের সম্পর্ক নেই। তার ভাবি এর আগেও তার তিনটি বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন। তিনিও এলাকার গণ্যমান্যদের কাছে বিচার চেয়েছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু দায়েন কালু জানান, এ বিষয়ে দু’পক্ষই মৌখিকভাবে বিচার চেয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদে তাদের ডেকে খুব শিগগির একটা সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।





সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম শনিবার রাতে জানান, বিষয়টি তিনি লোকমুখে ও পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছেন। তবে তার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঠকের মন্তব্য: