




অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুকে হত্যার সময় পাশের রুমেই ঘুমাচ্ছিলো তার বড় মেয়ে অজিহা আলিম রিদ ও পাঁচ বছরের ছেলে। শিমুকে হত্যার পর বাসা থেকে বস্তায় ভরে লাশ বের করা হলেও তারা কিছু টের পায়নি। তদন্তসংশ্নিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য মিলেছে। পুলিশ বলেন, শিমু-নোবেল দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েটি ‘ও’ লেভেলে অধ্যয়নরত।
ছেলের বয়স ৫ বছর। পুলিশ মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেছে। ঘটনার রাতে গত শনিবার ভাইবোন মিলে একটি কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। এতকিছু ঘটে গেছে- তারা কিছুই বুঝতে পারেনি। রোববার দেরি করে ঘুম থেকে ওঠার পর মা-বাবা কাউকেই দেখতে পায়নি। ওইদিন দুপুরের দিকে মায়ের ফোনে কল দিয়ে মেয়ে সেটি বন্ধ পায়।





পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া শিমুর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল হত্যার কথা নিজে স্বীকার করেন। কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ তিন দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। একই ঘটনায় নোবেলের বন্ধু এসএমওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নোবেল বলেছেন, শিমু ‘মারা যাওয়ার পর’ তিনি ফরহাদকে ডেকে আনেন।
ছেলেমেয়ে কিছু বুঝে ওঠার আগেই লাশটি সরাতে চেয়েছিলেন তিনি। নোবেল দাবি করেছেন, শিমুকে হত্যা করা তার পরিকল্পনা ছিল না। দুইজনের ঝগড়ার এক পর্যায়ে তিনি তাকে চড় দেন। এতে শিমুও তার ওপর চড়াও হন। ক্ষিপ্ত হয়ে গলাটিপে ধরলে স্ত্রী নিস্তেজ হয়ে পড়েন। এরপর বন্ধু ফরহাদের পরিকল্পনায় লাশ গুমের সিদ্ধান্ত নেন তারা। কী নিয়ে ঝগড়া হয়েছে- সেই প্রশ্নে নোবেল ফের বলেছেন, তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি চলছিল। এ নিয়ে দাম্পত্য ও পারিবারিক কলহ চলছিল।





ফরহাদ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছেন, হত্যার আগে তিনি কিছুই জানতেন না। বন্ধুর ফোনে সাড়া দিয়ে বাসায় গিয়েছিলেন। সূত্র জানায়, নোবেল আর ফরহাদ মিলে শিমুর লাশ বাসা থেকে বের করার আগে নিরাপত্তাকর্মীকে নাশতা আনতে পাঠিয়েছিলেন। এর আগে তারা বাড়ির সিসি ক্যামেরা অকেজো করতে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল সুইচও বন্ধ করে দেন তারা।
পরে বস্তায় ভরা শিমুর লাশ গাড়িতে তোলা হয়। কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি আব্দুস ছালাম বলেন, নোবেল অকপটেই স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করছেন। নোবেল দাবি করেছেন, কিছু বিষয় নিয়ে তিনি স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন। স্ত্রীও তাকে সন্দেহ করতেন। গাড়ির যন্ত্রাংশের পুরোনো ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিছু একটা করার চাপ ছিল তার ওপর। এসব নিয়েই মূলত কলহ চলছিল।
পাঠকের মন্তব্য: