




রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত কর্ণফুলী গার্ডেন সিটিতে দুই দোকান থেকে ৭০০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) রমনা বিভাগ। গত ১৮ ডিসেম্বর কাকরাইলের কর্ণফুলী গার্ডেন সিটিতে ওই দুই দোকান থেকে ৭০০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি হয়। চুরি হওয়া স্বর্ণালংকারের মধ্যে অনন্ত ২০০ ভরি স্বর্ণ রাস্তায় পড়ে গেছে। এরমধ্যে ১০০ ভরির মত স্বর্ণ বিক্রি করেছেন। গোয়েন্দা পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য জানতে পেরেছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মিশু বিশ্বাস বলেন, গ্রেপ্তারকৃত চোরদের কথার সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। তবে ঘটনার পরদিন পথচারীরা রাস্তা থেকে ২২ ভরি স্বর্ণ রমনা থানায় জমা দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে অবস্থিত ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।





গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-ফরিদপুরের শাহিন মাতব্বর ওরফে শাহিন (৪৮), বরিশালের শৈশব রায় ওরফে সুমন (৩৫) ও তাঁতিবাজারের স্বর্ণালংকারের ছোট ব্যবসায়ী উত্তম কুমার সুর (৪৫)। ঢাকা মহানগর রমনা বিভাগের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গত ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা, বরিশাল ও ফরিদপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
এ বিষয়ে প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, রমনা থানায় মামলার পর ছায়া তদন্ত শুরু করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগ। মার্কেটের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ছায়াতদন্তের শুরুতে চোরদের গতিবিধি শনাক্ত করতে সক্ষম হই। শৈশব ও শাহীন দুজনই নিজ এলাকায় চুরি ও ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। তাঁদের এক দিন মনে হল, ঢাকায় এসে কিছু করবে। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পূর্বপরিচিত উত্তম রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে তারা তিনজন মিলে চুরির পরিকল্পনা করেন।





গোয়েন্দা প্রধান হাফিজ বলেন, পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘটনার ১৫ দিন আগে উত্তম তাঁতিবাজারের কল্পনা বোর্ডিংয়ে শাহিন ও শৈশবকে রাখেন। পরে তিনজন মিলে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে চুরি করার জন্য রেকি করে। কর্ণফুলী গার্ডেন সিটিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলনামূলক কম দেখতে পেলে সেখানে চুরির পরিকল্পনা করেন।
ঘটনার চার দিন আগেও তারা মার্কেটটিতে চুরির চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে ঘটনার দিন মার্কেটের পার্শ্ববর্তী একটি নির্মাণাধীন ভবন বেয়ে মার্কেটের একটি বাথরুমে প্রবেশ করেন। বাথরুম থেকে তারা মার্কেটের ভেতর প্রবেশ করে দুই দোকানে চুরি করে ৭০০ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়।





তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, তারা সোনার পাশাপাশি একটি দোকান থেকে কিছু হিরাও চুরি করেছে। কিন্তু চুরি করে যাওয়ার সময় হিরা ও সোনা থাকা একটি ব্যাগ রাস্তায় পড়ে যায়। এরমধ্যে রাস্তা থেকে ২২ ভরি সোনা পাওয়া গেছে, যা রমনা থানায় জমা রয়েছে। তবে আমরা বলতে চাই রাস্তায় পড়ে যাওয়া সোনা ও হিরা কেউ যদি পেয়ে থাকেন অনুরোধ করবো, তারা সেসব জিনিস দ্রুত স্থানীয় থানায় জমা দেন। কেউ তা না করলে চোরাই মাল রাখার দায়ে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
চুরির স্বর্ণগুলো চোরেরা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে ফেলেছিল নাকি দোকানে বিক্রি করে দিয়েছিল সে প্রসঙ্গে এই গোয়েন্দা বলেন, ‘তাঁরা কিছু স্বর্ণ দোকানে রেখেছিল আবার কিছু স্বর্ণ তাদের কাছ কাছে ছিল। তবে তাঁরা বলেছেন, কিছু স্বর্ণ রাস্তায় পড়ে গিয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে আমরা ২০১ ভরি সোনা জব্দ করেছি। তাদের রিমান্ডে পেলে বাকি সোনা কোথায় আছে তা জিজ্ঞাসাবাদ করে উদ্ধারের চেষ্টা করব।
পাঠকের মন্তব্য: