‘বন্দি দশা’ থেকে মুক্তি চাই, অনেক কথা বলার আছে

‘বন্দি দশা’ থেকে মুক্তি চান কক্সবাজারে সংঘবদ্ধ ধ’র্ষ’ণের শিকার ঢাকার গৃহবধূ ও তার স্বামী। গত চারদিন যাবৎ অসুস্থ্য ৮ মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে নিরাপত্তা হেফাজতের নামে তাদের এক ঘরে আটক রাখা হয়েছে। এ নিয়ে দেশের একটি জাতীয় দৈনিকের কক্সবাজার স্থানীয় প্রতিনিধিকে ওই গৃহবধূর স্বামী মুঠোফোনে জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে নিরাপত্তা হেফাজতের নামে ঘটনার পরদিন থেকেই হলিডের মোড় ট্যুরিস্ট পুলিশের রেস্ট হাউজের একটি কক্ষে এক প্রকার ‘বন্দি’ রাখা হয়েছে। কোথাও যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ঠিকমতো খাবার দেওয়া হলেও আমরা অসুস্থ সন্তান নিয়ে দ্রুত বাড়ি ফিরে যেতে চাই।’ তিনি বলেন, বাইরে আমাদের নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে, সব জবাব দেব। আমাদেরও অনেক কথা বলার আছে।

এ বিষয়ে টুরিস্ট পুলিশ চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মুসলিম সাংবাদিকদের জানান, মামলা তদন্তে সহায়তা ও তাদের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়, সে জন্য তাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদের ঠিকমতো খাবার দেওয়া হচ্ছে। এর আগে ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হয়।

মুঠোফোনে ভুক্তভোগী নারীর স্বামী জাতীয় দৈনিকের প্রতিনিধিকে আদালতে নিজের স্ত্রীর দেহ ব্যবসায় জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেওয়ার যে কথা পুলিশ বলেছে, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বন্দি দশা থেকে বের হতে গেলে যেসব কথা বলা দরকার তাই আমার স্ত্রী বলেছেন। এখান থেকে বের হতে পারলে আমার অনেক কথা বলার রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যদি মাদক বা অসামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকি তাহলে প্রশাসন তদন্ত করে দেখুক। আমরা তো আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আসামিদের গ্রেফতার না করে আমাদেরকে কেন বন্দি রাখা হলো? এবং আমার স্ত্রীকে নিয়ে নানা কথা বলা হচ্ছে, যা আইন পরিপন্থি।

এদিকে ট্যুরিস্ট পুলিশ রোববার দুপুরে তাদের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় আসামিদের সঙ্গে ভুক্তভোগী নারীর পূর্ব পরিচয় ও তার চরিত্র নিয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের বক্তব্য নিয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মুসলিম বলেন, ওটা ওই নারীর ব্যক্তিগত বিষয়। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে যারা ক্রাইমটা করছে, ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা। পর্যটদের নিরাপত্তার নিশ্চিত করা ও পর্যটন শিল্পের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখা। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা কামনা করে নেতিবাচক কিছু না লেখার অনুরোধ করেন। সভায় কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি মো.জিল্লু রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পর্যটন গলফ মাঠ এলাকা থেকে ওই নারীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ করে একদল দুর্বৃত্ত এবং তার স্বামী ও সন্তানকে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে র‌্যাব ২৩ ডিসেম্বর রাতে ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মো. আশিক (২৮), মো. বাবু (২৫), ইসরাফিল হুদা জয় (২৮) ও রিয়াজ উদ্দিন ওরফে ছোটন (৩০) এবং অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এর পর থেকে তাদেরকে হেফাজতে রাখা হয়েছে।

পাঠকের মন্তব্য:

Check Also

শাকিব কেন তাহলে অপুকে আমার কাছে পাঠালেন: রহমত উল্লাহ

সম্প্রতি চিত্রনায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এর পর মীমাংসার জন্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *