দীর্ঘ ১৯ দিনের কারাবাস যেভাবে কেটেছে পরীমনির

গ্রেপ্তারের ২৭ দিন এবং কারাবাসের ১৯ দিন পর অবশেষে মুক্তি পেলেন আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি। কয়েক দফা চেষ্টার পর মঙ্গলবার তিনি ঢাকা দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন পান এবং বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। এ সময় প্রিয় নায়িকা পরীমনিকে দেখতে কারাফটকের সামনে ছিল উৎসুক জনতার ভিড়।

ঢাকাই চলচ্চিত্রের সবচেয়ে হাসিখুশি নায়িকা এই পরীমনি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই প্রতিটি দিন তাকে উচ্ছলতার মধ্যে কাটাতে দেখা গেছে। শুটিং স্পট, হোটেল, রেস্তোরাঁ, পার্টি- সবখানেই তিনি বেশ প্রাণবন্ত হিসেবে ধরা দিয়েছেন। কিন্তু ১৯ দিনের এই কারাবাস কেমন কেটেছে তার?

কারা কর্তৃপক্ষ ঢাকাটাইমসকে জানায়, কারাগারে অনেকটা নীরবে ১৯টি দিন কাটিয়েছেন পরীমনি। কোনো অস্বাভাবিক আচরণ করেননি। দিনের অধিকাংশ সময় তাকে চিন্তিত দেখা গেছে। কারও সঙ্গে তেমন কথা বলেননি। বই পড়ে, শুয়ে বসে সময় কেটেছে তার। এছাড়া কারাগারে অন্য বন্দিদের যে খাবার দেওয়া হয়, পরীমনিকেও এতদিন তাই দেওয়া হয়েছে।

তবে এমন পরিবেশে থেকে মাঝেমধ্যে পরীমনি বিরক্ত ও ধৈর্যহারা হয়ে যেতেন বলেও জানায় কারা কর্তৃপক্ষ। তার নজির গত ১৯ আগস্ট যখন তাকে আদালতে তোলা হয় তখনও পাওয়া যায়। সেদিন নায়িকার জামিন আবেদন করেননি তার আইনজীবীরা। এরপর নায়িকা আদালত থেকে বেরিয়ে আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা আমার জামিন চাচ্ছেন না কেন? আমি তো পাগল হয়ে যাবো!’

অবশেষে সেই যন্ত্রণাময় বন্দি জীবন থেকে মুক্তি পেলেন পরীমনি। এর আগে কয়েক দফায় আবেদন করেও জামিন পাননি নায়িকা। উল্টো তিন দফায় তাকে রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেয় ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

উপায়ন্তর না পেয়ে পরীমনি হাইকোর্টের দারস্থ হন। হাইকোর্ট নায়িকার জামিন শুনানি দ্রুত নিষ্পত্তির আদেশ দেন। সেই মতো মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পরীমনির জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং তিনি জামিন পান।

গত ৪ আগস্ট পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে বিপুল মদ ও মাদকসহ আটক করে র্যা ব। ওই দিনই নায়িকার নামে বনানী থানায় মাদক আইনে একটি মামলা হয়। মামলার তদন্তভার যায় সিআইডির হাতে। এরপর ৫ আগস্ট পরীমনিকে আদালতে তুলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার সাত দিনের রিমান্ড চায় সিআইডি। শুনানি শেষে আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

সেই রিমান্ড শেষে গত ১০ আগস্ট পরীমনিকে ফের আদালতে তোলা হয়। সেদিন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাকে আরও পাঁচ দিনের রিমান্ডে চায়, অন্যদিকে পরীমনির আইনজীবী তার জামিন আবেদন করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে নায়িকাকে আরও দুই দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।

সেই দুই দিনের রিমান্ড শেষে গত ১৩ আগস্ট তৃতীয় দফায় আদালতে তোলা হয় পরীমনিকে। এদিনও নায়িকার জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী। সেই আবেদন খারিজ করে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। সেদিন বিকালেই পরীমনিকে নিয়ে যাওয়া হয় কাশিমপুর কারাগারে। রাখা হয় মহিলা ওয়ার্ডে। সেই থেকে গত ১৯ দিন কারাবন্দি ছিলেন পরীমনি।

পাঠকের মন্তব্য:

Check Also

আমরা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে গেছি, সেখান থেকেই হিরো আলমের উত্থান

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত-সমালোচিত ব্যাক্তি আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। প্রথমে মিউজিক ভিডিওতে মডেল হিসাবে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *