সাগরের মাঝে রহস্যময় সেই দুর্গ এখন বিলাসবহুল হোটেল।

আশেপাশে যত দূর চোখ যাচ্ছে শুধুই নীল জলরাশি। যেখান থেকে দেখছেন তার আশেপাশে নেই কোনো দ্বীপ কিংবা উপকূল। এই বিশাল জলরাশির মাঝেই আছে গোলাকার এক প্রতিরক্ষা দুর্গ। যার নাম স্পিটব্যাংক ফোর্ট। বর্তমানে সেই দুর্গ একটি বিলাসবহুল হোটেল; সৈন্যদের কামান দাগার বদলে শ্যাম্পেনের গ্লাস।

ইংল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলে পোর্টসমথ বন্দরের মুখেই সাগরের পানির মধ্যে দুর্গটির অবস্থান। উপকূল থেকে মাত্র এক সামুদ্রিক মাইল দূরত্বে। বিলাসবহুল সব হোটেলের মধ্যে এটিও অন্যতম। অতীতে স্পিটব্যাংক ছিল একটি ফোর্ট বা দুর্গ। যার কাজ ছিল পোর্টসমথ বন্দরে ঢোকার মুখটি সুরক্ষিত করা। আজ সেই ফোর্ট পরিণত হয়েছে একটি বিলাসবহুল হোটেলে।

তীর থেকে হোটেল পর্যন্ত আসাটাই একটা অ্যাডভেঞ্চার। উপকূল থেকে মাত্র ১৫ মিনিটের যাত্রায় পৌঁছে যাওয়া যায় সেখানে। তবে সাগরের স্রোত এখানে কম নয়, কাজেই বোটের ওঠা-নামায় সি-সিক হয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে অনেকের। ১৩৮ বছরের পুরনো ফোর্টটি দেখলে মনে হবে না যে, এটি একটি বিলাসবহুল হোটেল। এই দুর্গে পৌঁছনোর পর অতিথিদের খাড়া সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয়। তারপর শুরু হয় শ্যাম্পেনের গ্লাস দিয়ে অতিথিদের অভ্যর্থনা পর্ব।

দিন কয়েকের ছুটি কাটানোর জন্য স্পিটব্যাংক ফোর্টের জুড়ি নেই। ব্রিটিশ কোটিপতি মাইক ক্লেয়ার ফোর্টটি কেনেন ২০০৯ সালে। মাত্র ১৩ লাখ ইউরো মূল্যে কেনা হয় ৩৩ হাজার বর্গফুটের এই দুর্গ। পরে আরো ৪০ লাখ ইউরো ব্যয় করে ফোর্টের ডেকোরেশন পাল্টে দেওয়া হয়। এটি হলো সমুদ্রের দিকে মুখ করা কামানের ঘরগুলোর একটি। আগে এখানে সাড়ে বারো ইঞ্চি ব্যাসের একটা কামানের ঘর।

তিনটি হেলিপ্যাডের সমান স্পিটব্যাংক ফোর্টে রয়েছে ২৩টি শয়নকক্ষ, রেস্তোঁরা, থিমযুক্ত বার, হট টব এবং একটি সানডেক। এছাড়াও ৯টি সুইট আছে। সেখানকার প্রত্যেকটি সুইটের স্টাইল আলাদা। দিনে ছয় হাজার ৩০০ ইউরো খরচ করতে পারলে গোটা স্পিটব্যাংক ফোর্টটাই বুক করা যায়। অতীতে পানির নীচের ঘরগুলোতে ২০০ সৈন্যের থাকার ব্যবস্থা ছিল। এখানে একসঙ্গে ২০০ সৈন্যের খাবার তৈরি হতো। আজ সেখানে হোটেল গেস্টদের জন্য বার।

আজ ফোর্টের ৯টি বিলাসবহুল সুইটে ১৮ জন অতিথি রাত কাটাতে পারেন। তাদের অধিকাংশ এক কিংবা দুই রাত্রির বেশি থাকেন না। তবে অতীতের সেই কঠিন বাস্তবের কথা ভেবে সব অতিথিদের রোমাঞ্চ হয় বৈকি। এখানে এখনো দেখা যায়, মাটিতে কামানের চাকার দাগ। কামান নড়াচড়া করার জন্য যে দড়ি ঝোলানো হত, তার আংটা।

পাঠকের মন্তব্য:

Check Also

১০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করেছিলেন দু’ভাই, আজ ১৫০ কোটি টাকার কোম্পানির মালিক

কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায় যে একদিন সাফল্য নিয়ে আসবেই সেই নিয়ে একটি ছোট্ট গল্প বলতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *